সুমন আহমেদ বিজয়, লাখাই থেকে: গত ২০ মার্চ লাখাই থানাধীন তিস্কারপুর এলাকায় অজ্ঞাতনামা ০১ যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে লাখাই থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডটি প্রাথমিকভাবে রশি দিয়ে গলা প্যাঁচাইয়া সংঘঠিত হয়েছে বেলে নিশ্চিত হওয়ার পর এসআই মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বাদী হয়ে উক্ত ঘটনায় এজাহার দায়ের করেন।
মামলা রুজু হওয়ার পর লাখাই থানার একদল চৌকস পুলিশ টিম হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে তৎপর থাকে। পরবর্তীতে মামলা রুজুর পর চৌকস পুলিশ টিম অজ্ঞাতনামা মৃত দেহটি সনাক্ত করে জানিতে পারে ভিকটিম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সরাইল থানাধীন ইসলামাবাদ এলাকার শুক্কুর আলীর পুত্র ফালু মিয়া এবং সে পেশায় একজন টমটম চালক।
উক্ত সূত্র কে কাজে লাগিয়ে এএসআই মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন ও এএসআই মোঃ তোহা একদল পুলিশ সদস্য নিয়া হত্যাকান্ডের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করার কাজ শুরু করে।
পরবর্তীতে তাহারা তথ্য পান ঘটনার দিন জনৈক জসিম ও রাসেল মিয়া নামে দুইজন ব্যাক্তি ভিকটিম ফালু মিয়ার টমটম ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে কৌশলে টমটমটি ভাড়া করে তাকে লাখাই থানাধীন মোড়াকড়ি এলাকায় নিয়া আসে। মোড়াকড়ি এলাকায় আনার পর আসামীরা ভিকটিম ফালু মিয়াকে নেশাজাতীয় দ্রব্য মুড়ি ও চানাচুরের মিশিয়ে খাওয়ায়।
উক্ত নেশাযুক্ত মুড়ি চানাচুর খাওয়ার পর ভিকটিম ফালু মিয়া অচেতন হয়ে পড়লে আসামী রাসেল মিয়া ভিকটিম ফালু মিয়াকে নিয়ে টমটমের পিছনে বসে এবং ঘটনায় জড়িত অপর আসামী জসিম টমটমখানা চালালিয়ে তিস্কারপুর এলাকায় নিয়া আসে। এরপর তাহারা টমটমখানা রাস্তার পার্শ্বে রেখে ভিকটিমকে নিয়ে খালের মধ্যে নামে এবং সেখানে থাকা একটি গাছের উপর ভিকটিমকে বসায়। গাছের উপরে ভিকটিমকে বসানোর পর আসামী রাসেল মিয়া ভিকটিমকে ধরে রাখে এবং অপর আসামী জসিম নাইলনের রশি দ্বারা ভিকটিমের গলা প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আসামীরা দ্রুত টমটমটি নিয়ে নখলাউক ও কাশিমপুর হইয়া বুল্লা বাজারে গেলে টমটমের চার্জ শেষ হয়ে যায়। তখন আসামীরা সেখানে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করে। সকাল হওয়ার পর আসামীরা অন্য আরেকটি টমটম ভাড়া করে গাড়ী ভাদিকারা এলাকায় নিয়া আসে। ভাদিকারা আসার পর স্থানীয় লোকজনের গাড়ী দেথে সন্দেহ হলে তারা গাড়ীটি আটক করেন।
এরই সূত্র ধরে পরবর্তীতে এএসআই মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন ও এএসআই মোঃ তোহা একদল পুলিশ সদস্য নিয়ে উক্ত ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামী রাসেল মিয়া (২৫) পিতা-মৃত ছাত্তার মিয়া, সাং-শিবলা, থানা-অষ্টগ্রাম, জেলা-কিশোরগঞ্জ এর বসত ঘর হতে রাসেল মিয়া এবং আলামত গোপনে সহায়তাকারী ইসলাম মিয়া (৩৫), পিতা-মৃত জালাল মিয়া সাং-চান্দিয়ারা, থানা-বি-বাড়ীয়া সদর,জেলা-বি-বাড়ীয়াকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে লাখাই থানার ওসি তদন্ত অজয় চন্দ্র দেব বলেন এসংক্রান্তে আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। ঘটনায় জড়িত অপর আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত আছে।