বিজয় রায়, ছাতক প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতকে একটি চায়ের দোকান থেকে মোবাইল চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে মধ্যযুগীয় বর্বর নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড় চলছে।
কিশোরের নাম শামীম আহমদ (১৭)। সে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের ধারন বাজার সংলগন্ন সৈদেরগাঁও গ্রামের আবদুন নূরের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে ধারন বাজারের উত্তরে বেত বাগানে এ ঘটনাটি ঘটে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কৈতক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তী ও চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয় ও কিশোরের পরিবার সুত্রে জানা যায়, ৩-৪ বছর যাবৎ একই ইউনিয়নের পিরপুর গ্রামের জিল্লু মিয়ার মালিকানাধিন ধারন বাজারস্থ্য চায়ের দোকানে কাজ করে আসছিল শামীম। গত মঙ্গলবার ছোরাব আলী নামের একজনের একটি মোবাইল ওই চায়ের দোকান থেকে চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ চায়ের দোকানের মালিক জিল্লু মিয়ার নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা জামানত নিয়ে গত শুক্রবার শালিস বৈঠকের তারিখ নির্ধারন করেন।
কিন্ত ওই শালিস বৈঠকের আগের দিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০ টার সময় গ্রাম্য কবিরাজের নিকট তদবির করার কথা বলে দোকানের মালিক জিল্লু মিয়ার নির্দেশে কিশোরের পিতা আবদুর নুরের সামনে চায়ের দোকান থেকে কিশোর শামীমকে নিয়ে যান কতিপয় যুবক। ধারন বাজারের উত্তরে একটি বেত বাগানে নিয়ে কিশোর শামীমের হাত-পা বেঁধে পাশবিক বর্বর নির্যাতন করা হয়। তার দুটি পা ভেঙ্গে দেয় দুষ্কৃতিকারীরা। নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে শামীম অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তাকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে এসে ধারন বাজার সংলগ্ন একটি পরিত্যাক্ত কক্ষে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে একটি বিশেষ মহল। ঘটনার প্রায় একসপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কিশোর শামীমের হতদরিদ্র দিনমজুর পিতা আবদুর নুর থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। চায়ের দোকানের মালিক জিল্লু মিয়া দিনমজুর আবদুর নুরের উপর প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামা চাপা দিতে মরিয়া।
এ ব্যাপারে ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।