ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকে জালালাবাদ গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা বিস্তর অভিযোগ তুলছেন। সরকারী সেবামুলক এ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে এসে দায়িত্ব পালন না করেই সরকারী বেতন-ভাতাসহ সকল সুবিধা মাসের পর মাস ভোগ করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রাহকরা।
মঙ্গলবার সকালে অফিস চলাকালীন সময়ে ছাতক জালালাবাদ গ্যাস অফিসে সরজমিনে গেলে গ্রাহকদের এসব অভিযোগের চিত্র ফুটে উঠে। অফিসের ম্যানেজার প্রকৌশলী মাসুদ রানাসহ কার্যালয়ের কয়েকটি অফিস কক্ষ খোলা থাকলেও কর্মকর্তারা ষ্টেশনে না থাকায় চেয়ারগুলো খালি অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে আরো দুটি অফিস কক্ষ। ইনচার্জ মনিরুজ্জামানসহ কয়েকজন সিকিউরিটি কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান করে তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেখো গেছে। এসময় অফিসের একাউন্টস কর্মকর্তা আউয়াল আল মিনাল নিজের পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের এখানে আসার কারন জানতে চান। অফিসের ৬ জনের প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে ম্যানেজারসহ ৫ জনই অফিসের কাজে সিলেটে রয়েছেন বলে এ কর্মকর্তা উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।
এদিকে বেশ কয়েকজন গ্রাহক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার অপেক্ষায় অফিসের বারান্দায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ টানা কয়েকদিন ধরে তারা বিভিন্ন কাজে অফিসে এসে কোন কর্মকর্তাকে কার্যালয়ে পাচ্ছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ম্যানেজার প্রকৌশলী মাসুদ রানা, সহকারী প্রকৌশলী শরীফুল হক, সহকারী সমন্বয় কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলম, ষ্টাফ আব্দুস ছালাম ও গাড়ি চালক সুনিল এখানে জালালাবাদ গ্যাস অফিসের দায়িত্বে রয়েছেন। ছাতকে রয়েছে জালারাবাদ গ্যাসের দু’সহশ্রাধিক গ্রাহক। এর মধ্যে আবাসিক ও বানিজ্যিক গ্রাহক ২ হাজার, বৃহৎ শিল্প ৫টি ও চুন শিল্প ১৪টি। গ্রাহকদের অভিযোগ ম্যানেজার মাসুদ রানা, সহকারী প্রকৌশলী শরীফুল হক ও সহকারী সমন্বয় কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলমের স্বেচ্ছাচারিতায় এখানের গ্যাস গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এসব কর্মকর্তাদের দ্বারা গ্রাহকরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকারও হচ্ছেন বলে জানা গেছে। তারা মাসের পর মাস অফিসে না এসেই হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতাসহ সরকারী সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন। সহকারী সমন্বয় কর্মকর্তার পদে থাকলে গ্যাস অফিসের সর্বময় ক্ষমতাধর কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলম গ্যাস অফিসকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহার করছেন। তিনি ছাতকে থাকলেও অফিসে থেকে দায়িত্ব পালনে তার রয়েছে অনিহা। তবে মাঝে-মধ্যে বিকেল বেলা অফিস চত্ত্বর ঘুরে যান বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক, ছাতক পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ মজনু জানান, গ্যাস সংযোগ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের একটি আদেশের কপি নিয়ে ৩দিন ধরে তিনি অফিসে আসছেন। কিন্তু দায়িত্বশীল কাউকে না পেয়ে আদেশ কপিটি তিনি রিসিভ করাতে পারছেন না। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এ আদেশ কপি গ্যাস অফিসে রিসিভ করাতে সক্ষম হন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বললে জালালাবাদ গ্যাস ছাতক অফিসের ম্যানেজার তার সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করেছেন বলে জানান। এসব ব্যাপারে জালালাবাদ গ্যাস ছাতক অফিসের ম্যানেজার মাসুদ রানার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনেকটা দাম্ভিক সুরে জানান, তিনিসহ কর্মকর্তারা অফিসে আসা না আসার বিষয়টি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ নিয়ে কারো কাছে তিনি কৈফিয়ত দিতে রাজি নন।
ছাতক গ্যাস অফিসে কর্মকর্তারা নিয়মিত না আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জালালাবাদ গ্যাস অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী সামছুল আলম শাহীন জানান, ছাতকের গ্যাস সংক্রান্ত মামলা নিয়ে অফিসের কর্মকর্তাদের বেশীরভাগ সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। এ জন্য নিয়মিত অফিস করতে পারছে না তারা।
Posted ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad