রবিবার ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

ছাতকে ইজারা জটিলতায় চেলানদী বালুমহাল উত্তোলন বন্ধ, ৩০ হাজার শ্রমিক বেকার

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুন ২০২০     154 ভিউ
ছাতকে ইজারা জটিলতায় চেলানদী বালুমহাল  উত্তোলন বন্ধ, ৩০ হাজার শ্রমিক বেকার

বিজয় রায়, ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকে ইজারা জটিলতার গেঁড়াকলে পড়ে বন্ধ হয়ে আছে চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল। ফলে বালু মহাল সংশ্লিষ্ট সীমান্ত এলাকার নিন্ম আয়ের মানুষের রুটি-রোজির প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ইজারা নামক সরকারী বিধি।

প্রায় ৩ মাস ধরে এ বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়ে আছে। বালুমহাল বন্ধ থাকার কারনে লাখ-লাখ টাকা রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। পাশাপাশি বালু শ্রমিক, ব্যবসায়ী, নৌকা মালিক-শ্রমিকসহ বালু ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বেকার হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

বর্তমান বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে এদেশে সরকারী লকডাইনের কারনে সবকিছু বন্ধ হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছে নিন্ম আয়ের অগনিত মানুষ। এ পরিস্থিতিতে অভাব-অনটন এসব নিন্ম আয়ের মানুষের দ্বারে-দ্বারে এসে কড়া নাড়ছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার ইসলামপুরসহ আশপাশ ইউনিয়নের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ পাথর ও বালু ব্যবসার সাথে জড়িত।

বর্তমানে পাথরের সাম্রাজ্য প্রায় শেষ হওয়ায় বালু উত্তোলন ও ব্যবসা ঘিরে জীবিকা নির্ভর করে প্রায় ২৫-৩০ হাজার শ্রমজীবি মানুষ। এসব শ্রমিক-ব্যসায়ীদের শেষ অবলম্বন হচ্ছে চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল। বর্তমানে বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের জীবিকার চাকা আটকে যায় ইজারা জটিলতায়। বালু মহালে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকার সুযোগে স্থানীয় একটি চক্র চেলা ও মরা চেলা নদীতে বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। চক্রটি প্রতিদিনই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে  নৌকা ভর্তি করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র ১৪২৭ বাংলা অর্থ বছরের জন্য ছাতক-দোয়ারা উপজেলাধীন চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল ইজারা প্রদানে জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ কর্তৃক এক নোটিশে ১ এপ্রিল ১ম, ১৩ এপ্রিল ২য় এবং ২৭ এপ্রিল ৩য় পর্যায়ে দরপত্র আহবান করা হয়। এতে   ১ম ও ২য় পর্যায়ে তারিখ অনুযায়ী কোন ইজারা গ্রহীতা ইজারা গ্রহনে আগ্রহ না দেখালে ৩য় (চুড়ান্ত) পর্যায়ে ২৭ এপ্রিল মেসার্স কাওসার ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে।

কিন্তু ১২ মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা বালু মহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় মেসার্স কাওসার ট্রেডার্স’র দরপত্রে উল্লেখিত অর্থ তুলনামুল কম হওয়ায় চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল পুনঃ দরপত্র আহবানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুনঃ দরপত্র আহবানের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে মেসার্স কাওসার ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মোঃ কাওসার আহমদ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোট বিভাগের ভার্চুয়াল কোটে একটি রীট পিটিশন দাখিল করেন।

রীটের প্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল কোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ১৪ মে চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল পুনঃ দরপত্র কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এদিকে বালু মহাল খুলে না দেয়ায় শ্রমিক-ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ও নৌকার মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। বালু মহাল খুলে না দেয়া হলে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে বালু-শ্রমিক ও নৌকা শ্রমিকরা।

ইসলামপুর ইউনিয়নের মেম্বার আনোয়ার পাশা ও আব্দুস শহিদ জানান, বালু মহাল বন্ধ থাকার কারনে এলাকার বালু শ্রমিকরা অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন-যাপন করছে। এসব শ্রমিকদের বেঁচে থাকার পথ সচল রাখার দ্রুত চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল ইজারা প্রদানের দাবী জানান।

ক্ষুদ্র বালু ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ চৌধুরী এ ব্যাপারে জানান, বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ইজারা অর্থ বছরের ৩ মাস অতিক্রান্ত হওয়ায় সরকারও কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:১৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ জুন ২০২০

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(627 ভিউ)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com