কুলাউড়া প্রতিনিধি :- কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা ইটারঘাট বাজারে বুধবার ০৬ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৯টায় চোরাচালান কারবারিদের হামলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত বিজিবি সদস্যরা শ্রীমঙ্গলস্থ বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ৯টার দিকে বিজিবির শরীফপুর ক্যাম্পের ছয় সদস্যের একটি টহল দল ইটারঘাট বাজার এলাকা থেকে লোকমান মিয়া (৪২) নামক এক চোরাচালান কারবারিকে আটক করে। এসময় লোকমান বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা শুরু করলে তার সহযোগি ২০ থেকে ২৫ জন লোক জড়ো হয়ে লোকমানকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়।
বিজিবির সদস্যরা বাঁধা দিলে লোকজন তাঁদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে বিজিবির চারজন সদস্যের মাথা ফেটে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবি ১৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর লোকমান ও তার সহযোগিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে শ্রীমঙ্গলের ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর থেকে বিজিবির দুটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরে আহত সদস্যদের উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গলের ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে পাঠানো হয়।
ঘটনার সময় মুক্তিযোদ্ধা সোহাগ মিয়া (৭৫), আব্দুল কাইয়ুম (৪০), চা শ্রমিক রামচন্দ্র ভর (৩০)সহ কমপক্ষে ১০-১২জন গ্রামবাসী আহত হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবির সেক্টর কামান্ডার পর্যায়ের উর্ধ্বতন একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ ও তদন্ত করেছে। তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি সিলেট সেক্টরের ৪৮ ব্যাটেলিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর নাজমুল সাকিব, ৪৬ ব্যাটলিয়ন শ্রীমঙ্গল সেক্টরের সুবেদার আবু জামান, আমতৈল ক্যাম্পের কোম্পানী কামান্ডার আব্দুর রউফ এবং শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলীসহ মেম্বারগণ।
শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলী জানান, পরিস্থিতি আপাতত শান্ত আছে।
বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল হক জানান, লোকমান এলাকার চিহ্নিত চোরাকারবারি। হামলায় জড়িতরাও চোরাচালানের সাথে যুক্ত বলে জানা গেছে। লোকমানের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। এব্যাপারে কুলাউড়া থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানান।
পরিদর্শন শেষে বিজিবি সিলেট সেক্টরের ৪৮ ব্যাটেলিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর নাজমুল সাকিব জানান, গ্রামবাসী যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা ঠিক নয়। অপরাধী গ্রেফতারে গ্রামবাসীর সহযোগিতা করা উচিত ছিলো। গ্রামবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী উলঙ্গ অবস্থায় যদি বিজিবি আসামী লোকমান মিয়াকে নিয়ে আসে সেটাও উচিত হয়নি। তবে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Posted ১১:২৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad