কুলাউড়া প্রতিনিধি ::
কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়কের পাশে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠা সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাজের জন্য মিক্সট প্লান্ট(ড্রাম) এখন এলাকাবাসীর জন্য চরম দূর্ভোগ হয়ে উঠেছে। ব্যস্ততম এ রোডের পাশে এই প্লান্টটি গড়ে উঠায় দীর্ঘদিন ধরে যানবাহনে যাতায়াতকারী,স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে স্থানীয় এলাকাবাসী প্লান্টে তৈরিকৃত বিটুমিন ক্যামিক্যাল-রাসায়নিক,তৈল ডিজেল,আলকাতরা ও ড্রাস্টের গুড়োয় অসহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন। এই প্লানটি বন্ধের দাবী জানিয়ে এলাকাবাসী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের উত্তর কৌলা গ্রামে কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়কের পাশে মেসার্স এম আর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং এর মালিক ঠিকাদার মুহিবুর রহমান কোকিল সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাজের জন্য ২০১২ সালের দিকে একটি মিক্সট প্লান্ট(ড্রাম) ঠিকাদরী প্রতিষ্টান গড়ে তুলেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন ছাড়াই এই প্রতিষ্টান গড়ে উঠায় মূলত এরপর থেকে এই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকজনের বাড়িঘর,মসজিদ,কবরস্থান ও সড়ক দিয়ে যানবাহনে যাতায়াতকারীরা বিষাক্ত কালো ধূয়া ও ড্রাস্টের গুড়োয় নানা ভোগান্তি সহ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এছাড়াও বিটুমিন আলকাতরা ও মিক্সার মেশিনের বালু উড়ে গিয়ে পাশর্^বর্তী ঘর বাড়ির আসবাবপত্র,খাদ্যদ্রব্য, টিনের চালে ও গাছপালায় পড়ে ধুলোয় একাকার হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে এলাকার বৃদ্ধ,ছোট কোমলমতি শিশু ও রাস্তায় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ যাতায়াতকারীরা শ^াসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ছাড়াও ধুলোয় তাদের কাপড় ছোপড় নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া মেশিন চালুর ফলে বিকট শব্দের সৃষ্টি হলে পাশে অবস্থিত মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের নামাজ আদায় ও মক্তবে আসা কোমলমতি শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষাদানে ব্যহত হচ্ছে। মুসল্লিদের ওযুর সুবিধার্থে মসজিদের সামনে একটি পুকুর রয়েছে তাতে মেশিনের ব্যবহৃত তৈল জাতীয় পদার্থ ও বালুু পানিতে মিশে দূষিত হচ্ছে।
বিভিন্ন দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী স্থানীয় আব্দুল মতলিব (সমছ) বলেন, এই প্লান্টটি চালুর পর থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাঁর বাড়ি ঘর। পাশাপাশি এলাকার জনসাধারণ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্টানের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। এর প্রতিকার চেয়ে এলাকার শতাধিক লোকের স্বাক্ষর নিয়ে তিনি ইতি মধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান,কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কুলউড়া উপজেলার তৎকালীন ইউএনও তাহসিনা বেগম বিষয়টি আমলে নিয়ে এলাকার জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তদন্ত প্রতিবেদনসহ অভিযোগটি সুপারিশ সহকারে অগ্রায়নও করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেসার্স এম আর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং এর মালিক ঠিকাদার মুহিবুর রহমান কোকিলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এলাকার সুবিধার্থে এখন দিনে মেশিন চালানো হয় না। আমরা রাতে মেশিন চালু করি। আর এটাতো সরকারী প্রজেক্টের কাজ। যারা আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ দিচ্ছে তারা (সিএমবির) সরকারী জায়গা দখল করে আছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পরিবেশ দূষনের প্রতিকার চেয়ে আগে ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। বর্তমানে ওই ঠিকাদার এখন দূষিত বালু মিক্সারে দেয়না বলে জানিয়েছে। আর আগের মতো তেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে না।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান,বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত নয়। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ১:২৫ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad