বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: ইয়াবা দিয়ে কলেজ পড়ুয়া একই পরিবারের তিন-বোনকে জেলে ঢোকানোর হুমকি দিয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথে থানা পুলিশের এসআই আব্দুল লতিফ।
গত বৃহস্পতিবার মনোয়ারা বেগম (৪০) নামের এক নারীর অভিযোগ তদন্তে গিয়ে এসআই লতিফ মনোয়ারার সতিনের কলেজে পড়ুয়া ৩ মেয়েকে এভাবে হুমকি দেন। এসময় দারোগা লতিফ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন ‘তোদের মতো হাজারও বেহায়া মেয়েদের জেলে ঢোকিয়ে উচিৎ শিক্ষা দিয়েছি’। ‘আর আমার হাত কতটুকু লম্বা তোরা কেন? প্রধানমন্ত্রীও জানেন-না’। এসআই আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে হুমকির এমন অভিযোগ এনে রোববার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভোগী রাহেলা বেগম (৪৫) নামের মনোয়ারার সতিন। তিনি উপজেলা সদরের পাশর্^বর্তি জানাইয়া গ্রামের আশিক আলীর প্রথম স্ত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ২০১০ সালে স্বামী ও ৩ছেলে এবং ১মেয়েকে ফেলে ১২ বছর বয়সী অপর মেয়ে নাজমা বেমগমকে সাথে নিয়ে রাহেলার স্বামী আশিক আলীকে ভয় দেখিয়ে বিয়ে করেন মনোয়ারা বেগম। পারিবারিক কলহের জেরে ওই বছর ২ছেলে ও ৩ মেয়েকে নিয়ে রাহেলা স্বামীর কাছ থেকে পৃথক হয়ে একই বাড়িতে আলাদা ঘরে বসবাস করেন। আর তার সতিন মনোয়ারা স্বামী আশিক আলীকে নিয়ে অন্য আরেকটি ঘরে বসবাস করেন। এরপর থেকে দাদন ব্যবসা করে অঢেল টাকার মালিক হন মনোয়ারা। আর মিথ্যা অভিযোগ করে টাকার বিনিময়ে পুলিশ দিয়ে হয়রানির পাশাপাশি তার আগের তরফের ৩ ছেলে হাসান আহমদ (২১), হোসেন আহমদ (১৯) ও হাবিব আহমদকে (১৮) দিয়ে প্রতিনিয়ত রাহেলা ও তার সন্তানদের প্রাণ নাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন মনোয়ারা। বর্তমানে তার (রাহেলার) দুই ছেলে ব্যবসা করছে আর ৩ মেয়ে কলেজে লেখা পড়া করছে।
গত মঙ্গলবার সকালে মনোয়ারার মেয়ে নাজমা বেগম (২২) ও তার প্রেমিক শাহিনকে (২৪) বাড়ির অন্য একটি ঘরে বিবস্ত্র অবস্থায় পেয়ে মেয়েকে শাসন করেন আশিক আলী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মনোয়ারা তার স্বামীর কাছ থেকে টাকা পয়সা ও মোবাইল সেট কেড়ে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। স্বামী আশিক আলী টাকার জন্য প্রথম স্ত্রী রাহেলার ছেলে ইমামুল ইসলামের কাছে বাড়ির ৯টি গাছ ৪হাজার টাকায় বিক্রি করে ওই টাকা নিয়ে অন্যত্র চলে যান। পরদিন বুধবার সকালে গাছ কাটার সময় মনোয়ারা থানায় গিয়ে ইমামুলের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গাছ কাটার অভিযোগ করেন। রাতে অভিযোগ তদন্তে গিয়ে উভয় পক্ষকে ঝগড়াঝাটি না করতে বলেন এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা। এর পরদিন বৃহস্পতিবার আবারও মনোয়ারা এর পরদিন বৃহস্পতিবার আবারও মনোয়ারা রাহেলার মেঝো মেয়ে সাহেদা বেগমকে পিটিয়ে আহত করার পর থানায় গিয়ে উল্টো অভিযোগ করেন, রাহেলার ছেলে-মেয়েরা তাকে মারধর করেছে। আর এই অভিযোগ তদন্তে ওইদিন দু’বার তাদের বাড়িতে যান এসআই আব্দুল লতিফ। এসময় তিনি কলেজে পড়ুয়া মেয়েদের ইয়াবা দিয়ে জেলে ঢোকানোর হুমকি দেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই আব্দুল লতিফ ঘটনার সত্যতা স্বাীকার করে বলেন, অভিযোগ তদন্তে গিয়ে আইনগতভাবে যা করতে হয় তা তিনি করেছেন।
পুলিশ সুপার না থাকায় এই অভিযোগটি তিনিই দেখছেন জানিয়ে সিলেটের দক্ষিণ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমাম মোহাম্মদ শাদিদ বলেন, তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলে এসআই আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ১:০৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad